ধাপে ধাপে ওয়েবসাইট তৈরি করুন
আপনি কি ওয়েবসাইট তৈরি করতে চান? তাহলে আমাদের এই পদ্ধতি অনুসরণ করে আপনি অনায়াসে একটি ওয়েবসাইট বানাতে পারবেন। আমাদের এই পদ্ধতি-তে ওয়েবসাইট তৈরি করতে কোন Programming Language (প্রযুক্তি-গত ভাষা যা এইচটিএমএল, সিএসএস, জাভাস্ক্রিপ্ট, পিএইচপি ইত্যাদি) জানার কোন দরকার নেই। বাংলায় ওয়েব ডিজাইন এর ভালো কোন শিক্ষণীয় পদ্ধতি কোন ওয়েবসাইটেই নেই, তাই এই টিউটোরিয়াল তৈরি করা।
বর্তমানে আপনি যদি কোন ওয়েব ডিজাইনার কে দিয়ে একটি ওয়েবসাইট তৈরি করাতে চান, তবে সে কমপক্ষে ১০,০০০ (দশ হাজার টাকা) দাবী করে বসবে। আর যদি একটু জটিল ওয়েবসাইট হয় তবে তার মূল্য হয়ে যাবে আরও কয়েক গুণ বেশী। আমাদের এই পদ্ধতি যদি অনুসরণ করেন তবে খুব সহজেই আপনি ওয়েব ডিজাইনের টাকাটি সঞ্চয় করতে পারবেন।
ওয়েবসাইট তৈরি করার পদ্ধতি কি?
ওয়েবসাইট তৈরি করার ধাপ গুলি খুব সাধারণ।
- ১। প্রথমে ডোমেইন রেজিস্ট্রেশন এবং হোস্টিং
- ২। হোস্টিং এর সাহায্যে ওয়েবসাইট সেটআপ
- ৩। ওয়েবসাইট ডিজাইন
- ৪। ছবি বা অন্যান্য তথ্য যুক্ত করুন
শুরু করার আগে মনোযোগ দিয়ে পড়ুনঃ
সারা দুনিয়ায় শত শত ওয়েবসাইট তৈরি করার অ্যাপ, সফটওয়্যার এবং ওয়েবসাইট বিল্ডার আছে। যেমন ওয়ার্ডপ্রেস, জুমলা, দ্রুপাল ইত্যাদি। এছাড়া আপনি নিজে কোড করেও নিজের ওয়েবসাইট বানাতে পারেন। কিন্তু আমরা আপনাকে সেটি করতে বলছি না, কারণঃ
- এতে সময় লাগবে অনেক
- কোন একটি নির্দিষ্ট কোড শিখলেই হবে না, আপনাকে নানান ধরণের কোড জানতে হবে, যেমন পিএইচপি, এইচটিএমএল, জাভাস্ক্রিপ্ট ইত্যাদি। এই সকল কিছু দিয়েই একটি ভালো গুণমানের ওয়েবসাইট বানানো সম্ভব হয়।
- পরবর্তীতে ওয়েবসাইট আরও বাড়াতে গেলে অনেক সমস্যা দেখা দেবে।
তাহলে কোন প্রযুক্তি ব্যবহার করে আমরা ২০-৩০ মিনিটের মধ্যে একটি সম্পূর্ণ ওয়েবসাইট তৈরি করতে পারব?
আমরা এখানে ব্যবহার করব বিশ্বের সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত এবং জনপ্রিয় মাধ্যম ওয়ার্ডপ্রেস। কেন জনপ্রিয় বললাম এই রিপোর্ট দেখে নিতে পারেন।
কীভাবে সবাই ওয়েবসাইট তৈরি করছে?
ওপরের পরিসংখ্যান দেখেই আন্দাজ করতে পারছেন যে, ওয়ার্ডপ্রেসের জনপ্রিয়তা কোথায়!
- ওয়ার্ডপ্রেস (WordPress) (ফ্রি) ৫২ শতাংশ
- উইক্স (Wix) (ফ্রি নয়) ৭ শতাংশ
- জুমলা (Joomla) (ফ্রি) ৪ শতাংশ
- ওয়েবলি (Weebly) (ফ্রি নয়) ২ শতাংশ
কেন ওয়েবসাইট বানাতে সকলের প্রথম পছন্দ ওয়ার্ডপ্রেস?
এর প্রথম কারণ হল, ওয়ার্ডপ্রেস সম্পূর্ণ বিনামূল্যে ব্যবহার করতে পারবেন। যেখানে অন্যান্য ওয়েবসাইট বিল্ডার একেবারে বিনামূল্যে পাবেন না।
আমাদের কাজ করা সমস্ত প্রযুক্তির মধ্যে ওয়ার্ডপ্রেস হল সবচেয়ে সহজ। এটি ব্যবহার করে আপনি যে কোন ধরণের ওয়েবসাইট বানাতে পারবেন, তা ছোট ওয়েবসাইট হোক, ব্যবসার ওয়েবসাইট হোক, অনলাইন শপিং ওয়েবসাইট হোক কিম্বা কোন বড় ধরণের খবরের ওয়েবসাইট হোক! এই এক প্রযুক্তি দিয়েই আপনি সমস্ত কিছু বানাতে পারবেন।
- ওয়ার্ডপ্রেস বনাম এইচটিএমএল + সিএসএসঃ আপনাকে মোটামুটি ভাবে কোডিং শিখতে হলেও কমপক্ষে ৬ মাস সময় দিতে হবে। তারপরও ওয়ার্ডপ্রেসের সমকক্ষ ওয়েবসাইট বানাতে পারবেন না।
- ওয়ার্ডপ্রেস বনাম ওয়েবসাইট বিল্ডারঃ ওয়েবসাইট বিল্ডার ছোট ৩/৪ পাতার ওয়েবসাইট বানানোর জন্য ভালো। কিন্তু আপনাকে যদি ভালো ওয়েবসাইট বানাতে হয় এবং ভবিষ্যতে বড় করে তৈরি করার চিন্তা থাকে তবে ওয়ার্ডপ্রেসের জুড়ি নেই। আর ওয়েবসাইট বিল্ডার মোটেও SEO (Search Engine Optimization) এর জন্য ভালো নয়।
- ওয়ার্ডপ্রেস বনাম জুমলা-দ্রুপাল ইত্যাদিঃ জুমলা ও দ্রুপালের থেকে ওয়ার্ডপ্রেস ব্যবহার করা অনেক সহজ।
যদি আরও বিশদে জানতে চান তবে ওয়ার্ডপ্রেস বনাম জুমলা এবং দ্রুপাল পড়ে দেখতে পারেন।
তবুও যদি আপনি ওয়ার্ডপ্রেস ছাড়া দ্রুপাল বা জুমলা দিয়ে ওয়েবসাইট বানাতে চান, তবে আমরা পরে সেই পদ্ধতি নিয়ে লিখবো।
তবে আপনি যদি ওয়েবসাইট তৈরির ব্যাপারে একেবারে নতুন হন তবে আমাদের পরামর্শ হল, ওয়ার্ডপ্রেস এর সাথেই থাকুন।
ওয়েবসাইট তৈরি করার প্রথম ধাপঃ ডোমেইন ও হোস্টিং
ওয়েবসাইট তৈরি করার প্রথমেই দুটি জিনিস আপনার দরকার
- ডোমেইন নেম (এটি আপনার ওয়েবসাইটের একটি নাম যেমন ApnarSiteName.com)
- ওয়েব হোস্টিং (এটি একটি সার্ভিস যা আপনার ওয়েবসাইটকে ইন্টারনেটের সাথে যুক্ত করে)
আপনার যাবতীয় তথ্য যেমন ছবি, কোনো লেখা, ওয়েবসাইট তৈরির সমস্ত দস্তাবেজ ইত্যাদি জমা করে রাখার জন্য ওয়েব হোস্টিং দরকার। ওয়েব হোস্টিং ছাড়া আপনার ওয়েবসাইট অনলাইনে দেখা যাবে না।
আপনার নিজস্ব একটি ডোমেইন থাকলে সেটি আপনার পরিচিতিকে আরও বাড়িয়ে তোলে। সকলের বিশ্বস্ততা আদায় করতে হলে একেবারে নিজস্ব ডোমেইন দরকার। ফ্রী ডোমেইন বা AmarWebsite.Example.com এই জাতীয় ডোমেইন থেকে দূরে থাকুন। যে কোম্পানি বা ওয়েবসাইটের একটি ডোমেইন কেনার ক্ষমতা থাকে না, তাদের প্রতি সকলের বিশ্বাস যোগ্যতাও থাকে না।
বেশিরভাগ ওয়েব হোস্টিং কোম্পানি প্রথম বছরের জন্য ডোমেইন ফ্রী দেয়, এবং আপনাকে মোটামুটি প্রতিবছর ৮০০ থেকে ১২০০ ভারতীয় টাকা দিয়ে নবীকরণ করাতে হয়।
তাহলে কোথা থেকে ডোমেইন রেজিষ্ট্রেশন এবং ওয়েব হোস্টিং নেব?
আমাদের প্রথম পছন্দ হল 3CLOUDS HOSTING. আমরা ওয়েব হোস্টিং এবং ডোমেইন রেজিষ্ট্রেশন এখান থেকেই করে থাকি। কারণ আপনি এখানে হোস্টিং কিনলে, সারাজীবনের জন্য বিনামূল্যে ডোমেইন পাবেন! আর যেহেতু বাঙালি কোম্পানি তাই কোন সমস্যা হলে বাংলায় কথা বলা যায়!
তাহলে এখানে ক্লিক করুন এবং সারাজীবনের জন্য ডোমেইন পেয়ে যান।
- এটি কলকাতার কোম্পানি সুতরাং আপনি সহজেই মাতৃভাষায় সাপোর্ট পাবেন।
- কোন অসুবিধায় আপনি ২৪ x ৭ সাপোর্ট পাবেন।
- এরা ওয়ার্ডপ্রেস এক্সপার্ট। ফলে আপনার ওয়েবসাইটের কোনো সমস্যা হলে এরা পরামর্শ দিতে পারবে।
আপনি কি আগেই ডোমেইন কিনে রেখেছেন? তাহলেও কোনো অসুবিধা নেই। আপনি আপনার ডোমেইন বিনামূল্যে এখানে হস্তান্তরিত করতে পারবেন এবং বছর বছর নবীকরণের টাকা বাঁচাতে পারবেন।
তাহলে আসুন ডোমেইন আর ওয়েব হোস্টিং কিনে ফেলিঃ
১. প্রথমেই www.24x7cloudhost.com এ যান অথবা আপনার অন্য কোনো কোম্পানি পছন্দ হলে সেখানেও যেতে পারেন।
বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ যেহেতু আমরা 3Clouds ব্যবহার করি তাই তাদের সাথে কথা বলে আমাদের এই ওয়েবসাইট ব্যবহারকারীদের জন্য বিশেষ দামের ব্যবস্থা করেছি। আপনি লিংকে ক্লিক করে দেখতে পারেন।
অথবা বর্তমানে কোন ওয়েব হোস্টিং সেরা তা বিশদভাবে জানতে এখানে ক্লিক করুন।
সেরা ওয়েব হোস্টিং কোম্পানি ২০১৯
২. আপনার ওয়েব হোস্টিং প্যাকেজ বেছে নিনঃ
3Clouds কোম্পানির ৩ টি প্যাকেজ আছে।
- বেসিক (Basic Hosting)
- প্রিমিয়াম (Premium Hosting)
- এন্টারপ্রাইজ (Enterprise Hosting)
অন্য প্যাকেজ বেছে নিতে আপনি ওপরে ওয়েব হোস্টিং অপশনে ক্লিক করে অন্যান্য প্যাকেজ দেখতে পাবেন।
বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ আমাদের পরামর্শ মানলে এন্টারপ্রাইজ প্যাকেজ কিনুন কারণ এর সাথেই পাবেন আজীবন একটি ফ্রী ডোমেইন, যা আপনার বছরে ১০০০ টাকা সাশ্রয় করবে। এছাড়া এই প্যাকেজে মাসে এক লক্ষেরও বেশি মানুষ আপনার ওয়েবসাইট দেখতে পাবে।
ওপরের ছবিতে যে বোতাম আছে, তাতে ক্লিক করলেই দেখবেন অন্য একটি পেজ খুলে যাবে এবং আপনাকে ডোমেইন নেম বেছে নিতে বলবে।
৩. ডোমেইন নেম পছন্দ করুনঃ
যদি আপনার ডোমেইন আগে কেনা না থাকে, তবে এখানে নতুন করে রেজিষ্ট্রেশন করুন।
- যদি আপনি আপনার কোম্পানি বা ব্যবসার জন্য ওয়েবসাইট বানাতে চান তবে, ডোমেইন আপনার কোম্পানির নামের সাথে মিলিয়ে নির্বাচন করুন। যেমন YourCompanyName.com
- যদি আপনি নিজের জন্য ওয়েবসাইট বানাতে চান তবে আপনার নিজের নামই যথেষ্ট, যেমন YourName.com
ডোমেইন নাম সাধারণত com, org, in, co.in, bd, bd.com ইত্যাদি হয়। তবে বিগত কয়েক বছরে নানা ধরণের ডোমেইন যেমন agency থেকে pizza তৈরি হয়েছে। আপনি পছন্দ মতো যে কোন ডোমেইন নিতে পারেন।
আমাদের পরামর্শঃ প্রথমে ডট কম (.com) ডোমেইন দিয়ে দেখুন, যদি না পান তাহলে দেশীয় ডোমেইন ব্যবহার করুন। যেমনঃ আপনি ভারতীয় হলে in অথবা co.in ডোমেইন ব্যবহার করুন। আর আপনি যদি বাংলাদেশী হন তবে, com.bd অথবা bd ডোমেইন ব্যবহার করুন।
যদি আপনি আগে থেকে ডোমেইন রেজিস্টার করে থাকেন তবে তা বিনামূল্যে ট্রান্সফার করতে পারেন। ট্রান্সফার করতে দ্বিতীয় অপশন (Transfer your domain from another registrar) বেছে নিন। আর আপনি যদি আপনার ডোমেইন ট্রান্সফার না করতে চান তবে শেষ অপশন (I will use my existing domain and update my nameservers) বেছে নিন।
এবার নীচে Continue অপশনে ক্লিক করে পরবর্তী পাতায় যান।
এখানে আপনাকে একবছর, দু-বছর বা তিন বছরের অপশন বেছে নিতে হবে। এক মাসের জন্য কিনলে আপনি ডোমেইন ফ্রী তে পাবেন না। কারণ ডোমেইন সর্বদা এক বছরের জন্যই নথিভুক্ত হয়।
কন্টিনিউ অপশনে চাপ দেয়ার সাথে সাথে পরের পাতা দেখতে পাবেন, Domain Configuration.
এখানে আপনাকে বেছে নিতে হবে ডোমেইনএর সাথে অন্যান্য সুবিধাগুলি।
DNS Managementএবং Email Forwarding দুটি ফ্রী তে পাওয়া যাচ্ছে সুতরাং সেগুলি চিহ্নিত করে যুক্ত করে নিন।
ID Protection: এর মূল্য মাত্র ২৪৯ টাকা প্রতি বছর। এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আপনাকে আপনার ডোমেইন আপনার ইমেইল, ঠিকানা, ফোন নম্বর সব কিছু দিয়ে রেজিস্টার করতে হবে, এবং এই তথ্য যে কেউ অনায়াসে বের করে নিয়ে আপনাকে নানা ধরনের ইমেইল বা ফোন করতে পারে। যদি সেই তথ্য লুকিয়ে ফেলতে চান তবে এটি যুক্ত করে নিন।
এরপর Continue বোতামে ক্লিক করুন।
পরের পাতায় আপনার অর্ডার ভালো করে দেখে নিন এবং Checkout বোতামে ক্লিক করুন।
ওপরের ছবিতে যেহেতু ID Protection নেওয়া হয়েছে তাই ডোমেইন এর মূল্য ২৪৯ টাকা দেখাচ্ছে। আপনি যদি না নেন তবে সেটি শূন্য দেখাবে।
চেকআউট বোতামে ক্লিক করার পর আপনার নাম, ঠিকানা, মোবাইল নম্বর, ইমেইল দিন।
এরপর পাসওয়ার্ড দিন। আপনি যদি ভারতের বাইরে হন তবে PayPal পেমেন্ট বেছে নিন।
সব শেষে Terms of Service চেক করে Complete Order এ ক্লিক করুন।
ক্লিক করার পরে আপনি আপনার বিল দেখতে পাবেন। বিলের ওপরে Pay Now অপশনে ক্লিক করে পেমেন্ট করুন। ভারতীয়রা সমস্ত রকম ভাবেই পেমেন্ট করতে পারবেন। আর আপনি যদি বাংলাদেশ বা অন্য দেশের হন, তবে পেপাল এর সাহায্যে ক্রেডিট বা ডেবিট কার্ড দিয়ে পেমেন্ট করতে পারবেন।
পেমেন্ট করার পর কিছুক্ষন অপেক্ষা করুন। আপনি একটি ইমেইল পাবেন যেখানে আপনার কন্ট্রোল প্যানেলের লগইন করার তথ্য থাকবে।
আপনার ডোমেইন ও হোস্টিং কেনা হলে পরবরতী ধাপে যেতে পারেন।
ওয়েবসাইট তৈরি করার দ্বিতীয় ধাপঃ ওয়েবসাইট সেটআপ করুন
আপনার ওয়েব হোস্টিং এবং ডোমেইন কেনার পর এবার ওয়েবসাইট সেটআপ করতে হবে। প্রথমেই আপনাকে আপনার কন্ট্রোল প্যানেল এ লগইন করতে হবে।
১. কন্ট্রোল প্যানেলে লগইন করুনঃ
কন্ট্রোল প্যানেল (cPanel) হল, বিশ্বের সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত ওয়েবসাইট তৈরি এবং পরিচালনা করার সফটওয়্যার। প্রায় সকল ওয়েব হোস্টিং কোম্পানি এটি বিনামূল্যে দিয়ে থাকে। এখান থেকেই আপনার ওয়েবসাইটের সমস্ত কাজ করতে হবে। হোস্টিং কেনার সাথে সাথেই আপনার নথিভুক্ত ইমেইল ঠিকানায় কন্ট্রোল প্যানেলের যাবতীয় তথ্য পেয়ে যাবেন। সেটি ভালো করে দেখে নেবেন। সেখানে কন্ট্রোল প্যানেলে লগইন করার লিংক দেয়া থাকবে তাতে ক্লিক করলে ওপরের ছবির মতো একটি পাতা খুলবে। এখানে আপনার কন্ট্রোল প্যানেল ইউজার নেম এবং পাসওয়ার্ড (আপনার রেজিস্টার্ড মেইল এ গেছে) প্রদান করে লগইন করুন।
২. SSL সার্টিফিকেট ইন্সটল করুনঃ
ওয়েবসাইট তৈরি করতে এসএসএল কোন কাজে না লাগলেও এর গুরুত্ব অপরিসীম। এটি আপনার ওয়েবসাইটকে সুরক্ষিত রাখবে। সি-প্যানেল(cPanel) বা কন্ট্রোল প্যানেলে লগইন করার পরেই আপনার কাজ হবে ওয়ার্ডপ্রেস ইন্সটল করে নেওয়া। কিন্তু তার আগে একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ আছে। সেটি হল এসএসএল সার্টিফিকেট (SSL Certificate) ইন্সটল করা।
- এসএসএল সার্টিফিকেট কি? (What is SSL Certificate): SSL এর পুরো কথা হল Secure Socket Layer. মানে আপনার ওয়েবসাইটে আরও একটি সিকিউরিটি যুক্ত হবে। এবং আপনার ওয়েবসাইটে যত তথ্য প্রদান করা হবে তা, Encrypted হয়ে যাবে এবং সহজে তা অন্য কেউ ব্যবহার করতে পারবে না। এই সার্টিফিকেট ইন্সটল করলে আপনার ওয়েবসাইটের আগে https সিকিওর বা একটি তালার চিহ্ন দেখতে পাবেন (নীচের ছবির মতো)। যেখানে ক্লিক করলে দেখা যাবে যে ব্রাউজার দেখাচ্ছে আপনার ওয়েবসাইট সুরক্ষিত।
- কেন SSL সার্টিফিকেট ব্যবহার করা উচিৎঃ কারণ এটি আপনার ওয়েবসাইটে আরও একটি সিকিউরিটি প্রদান করে। এছাড়া ২০১৮ সালেই গুগল জানিয়ে দিয়েছে যে, SSL না থাকলে তাঁরা সমস্ত ওয়েবসাইটকে অসুরক্ষিত বলে জানিয়ে দেবে (নীচের ছবি দেখুন)। আর এটা আপনার ব্যবসার ক্ষেত্রেও ভালো হবে না। কারণ যারা আপনার ওয়েবসাইটে আসবে তাঁরা আপনাকে বিশ্বাস করতে পারবে না। সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন বা SEO এর ক্ষেত্রে আপনার ওয়েবসাইট পিছিয়ে পড়বে ফলে আপনার ওয়েবসাইট গুগলে খুঁজলে প্রথম পাতায় পাওয়া যাবে না।
তাহলে আসুন এসএসএল ইন্সটল করা যাক। প্রথমেই বলি, 3CLOUDS আপনাকে বিনামূল্যে SSL সার্টিফিকেট দিচ্ছে যেখানে অন্যান্য কোম্পানি গুলি আপনার কাছ থেকে বছরে ১৫০০ থেকে ৩৫০০ টাকা পর্যন্ত দাবী করে বসবে। যেমন গো-ড্যাডি (GoDaddy) প্রায় ৩৫০০ টাকা প্রতি বছর এসএসএল এর জন্য নিয়ে থাকে।
- সি-প্যানেলে লগইন করার পরেই দেখবেন এখানে অনেক অপশন পাবেন। একেবারে ওপরে দেখবেন খোঁজার জায়গা আছে। সেখানে টাইপ করুন SSL.
- এবার দেখবেন Let’s Encrypt SSL বলে একটি অপশন পাবেন, সেটাতে ক্লিক করুন।
- পরের পেজ-এ দেখবেন আপনার ডোমেইন এর পাশে ইস্যু (Issue) করার অপশন আছে। ক্লিক করুন।
- এবার আপনাকে নির্বাচন করতে বলবে কি ধরণের এসএসএল দরকার। যেখানে যেরকম আছে সেরকমই রেখে দিন এবং শুধু নীচের ইস্যু বোতামে ক্লিক করে ইন্সটল করুন।
কয়েক সেকেন্ড অপেক্ষা করলেই দেখবেন আপনার এসএসএল সার্টিফিকেট ইন্সটল হয়ে গেছে।
৩. ওয়ার্ডপ্রেস ইন্সটল করুনঃ
প্রায় সমস্ত ওয়েব হোস্টিং কোম্পানিই এক ক্লিকে ওয়ার্ডপ্রেস ইন্সটল করতে দেয়। আমরাও সেভাবেই ইন্সটল করব। আপনি যদি অন্য কোথাও হোস্টিং নিয়ে থাকেন তবে অসুবিধার কিছু নেই। অনায়াসেই আমাদের এই টিউটোরিয়াল দেখে ইন্সটল করতে পারবেন। আসুন এবার ওয়ার্ডপ্রেস ইন্সটল করা যাক।
১. পুনরায় কন্ট্রোল প্যানেলের প্রথম পাতায় যান বা লগইন করুন।
২. ওপরের সার্চ অপশনে লিখুন APP. লেখার সাথে সাথেই দেখবেন Softaculous App Installer বলে একটি অপশন আসবে (নীচের ছবির মতো), সেখানে ক্লিক করুন।
৩. পরের পাতায় ওয়ার্ডপ্রেস অপশনের ওপরে ক্লিক করুন।
৪. এর পরের পাতায় দেখতে পাবেন ইন্সটল অপশন (Install Now) আছে। অপশনে ক্লিক করুন।
৫. ক্লিক করার সাথে সাথেই দেখতে পাবেন একটি ফর্ম খুলে গেছে। সেখানে আপনার ওয়েবসাইটের যাবতীয় তথ্য দিয়ে ইন্সটল করতে হবে। আমরা এখানে সম্পূর্ণ দেখাব কোথায় কি বেছে নিতে হবে।
- Choose Protocol: প্রোটকল অপশনে https বেছে নিন। তাহলে আপনার ওয়েবসাইট এসএসএল যুক্ত হবে।
- In Directory: ডিরেক্টরি অপশনে WP কে একেবারে মুছে দিন, অর্থাৎ ওই স্থান একেবারে ফাঁকা রাখবেন। ওই স্থানে যা লিখবেন সেই স্থানে ওয়ার্ডপ্রেস ইন্সটল হয়ে যাবে। যেমনঃ আপনি যদি ওখানে new লেখেন, তবে আপনার ওয়েবসাইট হবে example.com/new. সুতরাং ওখানে কিছু লিখবেন না।
- Site Name: এখানে আপনার ওয়েবসাইটের নাম দিন। যেমন আমার ওয়েবসাইট ইত্যাদি। পরে আপনারা এটি পরিবর্তন করতে পারবেন। এখন না দিলেও চলবে।
- Site Description: এখানে আপনার ওয়েবসাইট সম্পর্কে দুকথা লিখবেন ১৬০ বর্ণ বা লেটারের মাধ্যমে। যেমনঃ এই ওয়েবসাইটে আপনারা জানতে পারবেন, কীভাবে ওয়েবসাইট তৈরি করা যায়, কীভাবে ওয়েবসাইট ডিজাইন করা যায়। পরে পরিবর্তন করতে পারবেন, এখান না দিলেও চলবে।
- Enable Multisite: এটিকে ছেড়ে দিন চেক করবেন না। পরে আমরা এটি নিয়ে আলোচনা করব।
- Admin Username: ওয়েবসাইটে লগইন করার জন্য আপনার ব্যবহার্য নাম বা ইউজার নেম দিন। সমস্ত ছোট হাতের ইংরেজীতে দেবেন।
- Admin Password: ওয়েবসাইটে লগইন করার জন্য পাসওয়ার্ড দিন। পাসওয়ার্ড সর্বদা কঠিন দেবেন যাতে অন্যকেউ বা হ্যাকার সেটিকে সহজে ভেঙ্গে না ফেলতে পারে।
- Admin Email: এখানে এই ইমেইল সরিয়ে আপনার জিমেইল বা অন্য ইমেইল দিন যা আপনি ব্যবহার করছেন। পাসওয়ার্ড ভুলে গেলে এই ইমেইল কাজে আসবে।
- Select Language: যেমন আছে রেখে দিন। পরে পরিবর্তন করতে পারবেন।
- Limit Login Attempts: যেমন আছে ছেড়ে দিন। টিক দেবেন না। পরে সব পরিবর্তন করতে পারবেন।
- Classic Editor: এটিতে টিক দিন। কারণ ওয়ার্ডপ্রেস বিগত বছরে ওয়েবসাইট ডিজাইনের একটি নতুন প্রযুক্তি এনেছে যা সকলের কাছে পছন্দের নয়। আমরা পরে এই নিয়ে আলোচনা করব।
এবার আপনি থিম বেছে নেয়ার অপশন পাবেন। যেমন আছে ছেড়ে দিন। আমরা পরে থিম ইন্সটল করব। একেবারে শেষে দেখবেন ইন্সটল বোতাম আছে, সেখানে ক্লিক করে ইন্সটল সম্পূর্ণ করুন।
ওয়ার্ডপ্রেস ইন্সটল সম্পূর্ণ হলে আপনি দেখতে পাবেন আপনার ওয়েবসাইট লিংক এবং আপনার ওয়ার্ডপ্রেস এডমিন লিংক।
সাধারণত এরকম হয়।
আপনার ওয়েবসাইট লিংকঃ example.com
আপনার ওয়েবসাইটের অ্যাডমিন লিংকঃ example.com/wp-admin
ওয়েবসাইট তৈরি করার তৃতীয় ধাপঃ ওয়েবসাইট ডিজাইন
সফল ভাবে ওয়ার্ডপ্রেস ইন্সটল করার পর যখন আপনি আপনার ওয়েবসাইট খুলবেন, দেখবেন একটি সাধারণ ওয়েবসাইট তৈরি হয়ে গেছে।
কিন্তু আপনি তো অন্যান্য সবার মতো সুন্দর ওয়েবসাইট চান তাই না? সেকারণেই আপনাকে ওয়ার্ডপ্রেস থিম ইন্সটল করতে হবে। ওয়ার্ডপ্রেস থিম হল একটি ওয়েব টেমপ্লেট যা আপনার ওয়েবসাইটকে সুন্দর ভাবে গুছিয়ে তুলতে সাহায্য করে। ওয়ার্ডপ্রেস থিমে কয়েক হাজার ফ্রী থিম পাওয়া যায় যা দিয়ে আপনি অনায়াসে আপনার ওয়েবসাইটকে সাজিয়ে গুছিয়ে তুলতে পারবেন। নীচে দেখুন কেমন ফ্রী থিম পাওয়া যায়।
বেশীরভাগ ওয়ার্ডপ্রেস থিম বিনামূল্যে পাওয়া যায়। কিন্তু বিনামূল্যে বলে একেবারে মন্দ নয়। একেকটি ওয়ার্ডপ্রেস থিম আরেকটির থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। প্রতিটি থিমেই আছে নিজের মতো করে গুছিয়ে নেওয়ার প্রযুক্তি।
আসুন তাহলে থিম ইন্সটল করা যাক।
- ১. প্রথমেই আপনার ড্যাশবোর্ডে লগইন করুনঃ ওয়ার্ডপ্রেসের অ্যাডমিন পেজ কে ড্যাশবোর্ড বলা হয়। অর্থাৎ আপনার ওয়েবসাইট-এর পরে /wp-admin (https://example.com/wp-admin) এটি জুড়ে দিলেই আপনি ড্যাশবোর্ডে চলে যাবেন। এবার আপনাকে আপনার ইউজার নেম ও পাসওয়ার্ড দিতে হবে যা আপনি ওয়ার্ডপ্রেস ইন্সটল করার সময় দিয়েছিলেন। নীচে ওয়ার্ডপ্রেস এর ড্যাশবোর্ডের ছবি দেয়া হল।
- ২. বাঁ-দিকের অপশন থেকে Appearance > Themes অপশনে ক্লিক করলেই আপনি দেখতে পাবেন আগে থেকেই ওয়ার্ডপ্রেসের নিজস্ব ৩-টি থিম ইন্সটল করা আছে।
- ৩. নতুন থিম ইন্সটল করতে গেলে আপনাকে Add New অপশনে ক্লিক করতে হবে। এরপরেই দেখবেন সেখানে প্রচুর থিম রয়েছে। ওপরে নানা অপশন আছে (যেমনঃ Popular, Latest, Favorites ইত্যাদি।) একেকটি বেছে নিয়ে পছন্দের থিম খুঁজে নিন।
- ৪. Add New অপশনে ক্লিক করার সাথে সাথেই আপনি দেখতে পাবেন অনেক থিম আপনার সামনে চলে এসেছে। এগুলির প্রতিটিই বিনামূল্যে ইন্সটল করতে পারবেন। যদি আপনার কাছে ওয়ার্ডপ্রেসের কোন থিম থেকে থাকে যা আপনি অন্য কোথা থেকে কিনেছেন, তাহলে একেবারে ওপরে দেখুন আপলোড থিম (Upload Theme) অপশন পাবেন। সেখানে ক্লিক করে আপনার ওয়ার্ডপ্রেস থিম আপলোড করতে পারবেন।
- ৫. এই সকল ফ্রী ওয়ার্ডপ্রেস থিম যদি আপনি ইন্সটল করতে চান তবে, কোন একটি থিমের ওপরে আপনার মাউস নিয়ে যান। দেখবেন, দুটি অপশন দিচ্ছে ইন্সটল এবং প্রিভিউ (Install and Preview)। ইন্সটল অপশনে ক্লিক করে আপনি থিম ইন্সটল করতে পারবেন এবং প্রিভিউ অপশনে ক্লিক করে ইন্সটলের পূর্বে থিম দেখে নিতে পারবেন।
বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ আপনি ওয়ার্ডপ্রেস থিম যে কোন সময় পরিবর্তন করতে পারেন। এতে আপনার ওয়েবসাইটে থাকা কোন তথ্য মুছে যাবে না। সুতরাং নিশ্চিন্তে আপনি থিম পরিবর্তন করুন।
ওয়েবসাইট তৈরি করার চতুর্থ ধাপঃ ছবি বা অন্যান্য তথ্য (content) যুক্ত করুন
আপনার থিম ইন্সটল হয়ে গেছে। এখন আপনি ওয়েবসাইটে তথ্য, ছবি ইত্যাদি যুক্ত করুন।
পেজ তৈরি এবং এডিট করুন
আপনার ব্যবসার জন্য পরিষেবা পাতা (Services Page) বা নিজেদের সম্পর্কিত পাতা (About Us Page) যোগাযোগ এর পাতা (Contact Us Page) ইত্যাদি তৈরি করতে হবে। এই পেজগুলি আপনি সরাসরি ওয়েবসাইটে দেখতে পাবেন না। আপনাকে মেনু তৈরি করে দেখাতে হবে। যেমন আমাদের ওয়েবসাইটে আপনি মেনু অপশনে দেখতে পাবেন।
১. ওয়ার্ডপ্রেস ড্যাশবোর্ডে গিয়ে বাম দিকের অপশনে Pages > Add New তে ক্লিক করুন।
২. এরপর আপনি আপনার তথ্য বা লেখা বা ছবি দেয়ার একটি জায়গা দেখতে পাবেন। যেভাবে আপনি মাইক্রোসফট ওয়ার্ড ব্যবহার করে লেখেন, ঠিক সেভাবেই লিখে যান। আর সব শেষে পাবলিশ (Publish) অপশনে ক্লিক করে সকলের জন্য উন্মুক্ত করে দিন।
- ১. এখানে আপনার পাতা বা পেজ এর শিরোনাম দিন।
- ২. এখানে আপনার লেখা লিখুন।
- ৩. লেখার জায়গায় ছবি দিতে Add Media অপশনে ক্লিক করুন এবং ছবি আপলোড করুন।
- ৪. এখানে ক্লিক করে আপনি লেখার জন্য আরও অপশন বেছে নিতে পারবেন।
- ৫. আপনার পাতা বা পেজ সকলের জন্য উন্মুক্ত করার আগে Preview অপশনে ক্লিক করে দেখে নিতে পারেন।
- ৬. সমস্ত তথ্য প্রদান করা হলে Publish অপশনে গিয়ে ক্লিক করুন। এবার আপনার পেজ সকলে ওয়েবসাইটে দেখতে পাবে।
মেনু (Menu) তৈরি করুন এবং আপনার পেজকে মেনুতে যুক্ত করুন
প্রতিটি ওয়েবসাইটের একটি মেনু থাকে ওপরের দিকে (যেমন আমাদের ওয়েবসাইটে পাবেন)। যেখানে ক্লিক করে আপনার সাইটে আসা ব্যক্তি তার পছন্দের পাতায় বা পেজে যেতে পারবেন। তাই এবার আপনাকে একটি মেনু তৈরি করে সেটি নির্দিষ্ট জায়গায় বসাতে হবে।
১. প্রথমেই আপনার পাতাটি প্রকাশিত করুন। যদি নতুন তথ্য দেয়ার থাকে তা দিয়ে সেটিকে নবীকরণ (Update) করুন।
২. এবার ড্যাশবোর্ড থেকে Appearance > Menu অপশনে যান। গেলেই দেখবেন Menu Name চাইছে। সেখানে একটি মেনু নাম দিন। যেমন প্রধান মেনু (Main Menu) ইত্যাদি। এরপর Create Menu অপশনে ক্লিক করে মেনু তৈরি করুন।
- ১. প্রথমেই পাতা বা পেজ গুলি চিহ্নিত করে Add to menu বোতামে ক্লিক করে মেনুতে নিয়ে যান।
- ২. এবার মেনুগুলি ঠিক মতো সাজিয়ে নিন। প্রতিটি মেনুর ওপরে মাউস নিয়ে ক্লিক করে চেপে ওপরে নীচে করলেই দেখবেন মেনুগুলি স্থান পরিবর্তন করছে।
- ৩. Primary অপশনটি চিহ্নিত করুন যাতে আপনার মেনু একেবারে ওপরে দেখা যায়।
- ৪. Save Menu অপশনে ক্লিক করে আপনার মেনু সংরক্ষণ করুন।
ব্যস, আপনার মেনু তৈরি! এবার আপনার ওয়েবসাইটে গেলেই আপনার মেনু দেখতে পাবেন।
পোস্ট তৈরি এবং এডিট করুন
পোস্ট হল আপনার ওয়েবসাইটের একটি মূল্যবান বিষয়। আপনার ওয়েবসাইট যদি দৈনিক সংবাদ পত্র বা ব্লগ জাতীয় কিছু হয় তবে আপনাকে প্রতিনিয়ত পোস্ট করতে হবে। ওয়ার্ডপ্রেস ওয়েবসাইটে পেজ এবং পোস্ট তৈরি করার পদ্ধতি একই রকম কিন্তু দুটির কাজ আলাদা।
- ১. প্রথমেই ওয়ার্ডপ্রেস ড্যাশবোর্ডের বাঁদিক থেকে Posts > Add New অপশনে ক্লিক করুন।
- ২. এবার পেজ তৈরি করার মতো পোস্ট তৈরি করুন। প্রথমে আপনার পোস্টের শিরোনাম দিন। এরপর আপনার পোস্টে তথ্য ও ছবি যুক্ত করুন।
- ৩. সবশেষে আপনার পোস্ট Publish বোতামে ক্লিক করে প্রকাশ করুন।
- ৪. এবার আপনি আপনার ওয়েবসাইটে গেলে আপনার পোস্ট দেখতে পাবেন। আপনার ওয়েবসাইট সর্বদা আপনার নতুন পোস্ট গুলি দেখাতে থাকবে।
পোস্ট ক্যাটেগরি এবং ট্যাগ অন্তর্ভুক্ত করুন
পোস্টের সাথে আপনি দুটি আলাদা অপশন পাবেন। Categories এবং Tags। ক্যাটেগরি বা বিভাগ আপনার প্রতিটি পোস্টকে আলাদা করে রাখবে। যদি আপনার দৈনিক সংবাদএর ওয়েবসাইট হয় তবে আপনার সংবাদের অনেক বিভাগ দরকার যেমনঃ রাজনীতি, খেলা, সাহিত্য, বিনোদন ইত্যাদি। আপনি ক্যাটেগরি তৈরি করে যখন কোন পোস্টকে সেই ক্যাটেগরিতে বা বিভাগে চিহ্নিত করে পাবলিশ বা প্রকাশ করবেন, সেই পোস্ট সেই ক্যাটেগরির অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবে।
- নতুন ক্যাটেগরি তৈরি বা এডিট করতে Post > Categories অপশনে যান। সেখানে আপনার পছন্দ মতো ক্যাটেগরি দিন এবং তৈরি করুন।
- পোস্ট তৈরি করার সময় আপনি ডান দিকে ক্যাটেগরি অপশন দেখতে পাবেন। আপনার পোস্ট যে ক্যাটেগরির অন্তর্ভুক্ত হবে, সেটিকে চিহ্নিত করে তারপর পোস্ট Publish বা প্রকাশ করুন।
এবার আপনি মেনু অপশনে গিয়ে এই ক্যাটেগরিকে মেনুতে যুক্ত করে নিন। তাহলেই আপনার পাঠকরা সেখানে ক্লিক করে সেই ক্যাটেগরির সকল পোস্ট পড়তে পারবে।
ট্যাগ হল একপ্রকার চিরকুট, যেখানে আপনার পোস্টের বিশেষ বিশেষ শব্দ গুলি দেয়া থাকবে। যেমন ধরুন আপনি বাংলা সাহিত্য বিভাগে শামসুর রাহমান এবং শঙ্খ ঘোষ এর কবিতা নিয়ে আলোচনা করে পোস্ট লিখেছেন। তাহলে Category এবং Tag দেবেন নিচের ছবির মতো।
আশাকরি ব্যাপারটি পরিষ্কার হয়েছে। প্রতিটি ট্যাগ কমা দিয়ে আলাদা করে দেবেন (যেমনঃ বাংলা সাহিত্য, কবিতা, শামসুর রাহমান, শঙ্খ ঘোষ) । এবং Add বোতামে চাপ দিলেই এরকম দেখা যাবে। অর্থাৎ আপনার ট্যাগ যুক্ত হয়ে গেছে। এবার আপনি পোস্ট Publish বা প্রকাশ করুন।
ওয়ার্ডপ্রেস ওয়েবসাইটের প্রাথমিক কিছু সেটিং
এবার আমরা ওয়ার্ডপ্রেসের প্রাথমিক সেটিংস নিয়ে আলোচনা করব। এগুলি খুবই গুরুত্বপূর্ণঃ
ওয়েবসাইটের Title বা শিরোনাম এবং Tagline পরিবর্তন করুন
- ওয়েবসাইটের শিরোনাম (Website Title) ওয়েবসাইট তৈরি করার ক্ষেত্রে খুবই গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি দেখেই সার্চ ইঞ্জিন গুলো (যেমন গুগল) আপনার ওয়েবসাইটকে চিনে নেবে যে এটি কোন বিষয়ের ওয়েবসাইট। সেইমতো বিবেচনা করে তাঁরা আপনার ওয়েবসাইটকে প্রদর্শন করবে। আপনার ওয়েবসাইটের শিরোনাম ৬৫ বর্ণ বা letter এর মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখবেন। কারণ এর বেশি সার্চ ইঞ্জিন গুলো দেখে না। আপনার ওয়েবসাইটের প্রধান শব্দগুলি যেন আপনার শিরোনামে থাকে সেদিকে খেয়াল রাখবেন।
- ওয়েবসাইটের ট্যাগ লাইন (Tagline): ট্যাগলাইন আপনার ওয়েবসাইটের শিরোনামের পরে থাকে। এখানে সংক্ষিপ্ত ভাবে আপনার ওয়েবসাইট সম্পর্কে লিখবেন। মনে রাখবেন, আপনার লেখা যেন ১৬০ বর্ণের (letters) বেশী না হয়। এর বেশী সার্চ ইঞ্জিন গুলো দেখে না।
এই দুটি অপশনে যেতে গেলে আপনাকে ড্যাশবোর্ডের বাঁদিক থেকে Settings > General অপশন বেছে নিন। এবং নিচের ছবির মতো সেগুলি পূরণ করুন। সবশেষে Save Changes এ ক্লিক করে সংরক্ষণ করুন।
স্বয়ংক্রিয় ভাবে সকল পোস্টে মন্তব্য বন্ধ (Disable Comments) করতে চান ?
অনেক ক্ষেত্রে আপনার হয়তো মনে হতে পারে নতুন পোস্টে মন্তব্যের দরকার নেই। তাই সমস্ত পোস্টে মন্তব্য বন্ধ করতে Settings > Discussion অপশনে যান। এবং নীচের ছবির মতন Allow people to post comments on new articles অপশনটির চিহ্নিতকরণ বন্ধ (untick) করুন। সব শেষে সেভ বা সংরক্ষণ করুন।
নিজের বানানো পেজ কে প্রথম পাতা (Home Page) হিসেবে ব্যবহার করতে চান?
আপনার ওয়েবসাইটের প্রথম পাতা আপনার সর্বশেষ প্রকাশিত পোস্ট গুলিকে দেখায়। কিন্তু আপনি নিজের তৈরি করা কোন পেজ কে প্রথম পাতা হিসেবে দেখাতে পারেন।
১. প্রথমেই Settings > Reading এ যান।
২. এবার A Static Page সিলেক্ট করুন। এবং নিজের পছন্দ মতো পেজ বেছে নিয়ে সেভ করুন।
ওয়েবসাইটের সাইড বার এডিট করুন
আপনি যেকোন ওয়ার্ডপ্রেস থিম ইন্সটল করুন না কেন, বেশিরভাগ থিমেই আপনি একটি সাইডবার পাবেন। বেশীরভাগ ক্ষেত্রে এটি বাঁদিকে থাকে।
আপনি যদি এই সাইড বার কে এডিট করতে চান তবে,
১. ওয়ার্ডপ্রেস ড্যাশবোর্ড থেকে Appearance > Widgets অপশনে যান।
২. সেখানে গিয়ে আপনি নানা অপশন পাবেন। শুধু টেনে টেনে একেকটি অপশন আপনার সাইড বারে নিয়ে যেতে পারবেন এবং কোন অপশন মুছে ফেলতে তার ওপরে ক্লিক করে Delete অপশনে গেলেই মুছে যাবে।
এখানে আপনি একটি এইচটিএমএল এডিটর পাবেন যেখান থেকে আপনি আপনার কোড সাইড বারে অনায়াসে দেখাতে পারবেন।
প্লাগইন ইন্সটল করুন এবং ওয়ার্ডপ্রেসকে আরও কাস্টমাইজ করুন
ওয়ার্ডপ্রেস দ্বারা ওয়েবসাইট তৈরি করতে প্লাগইনের অবদান অপরিসীম। আসুন জেনে নিই প্লাগইন সম্পর্কে।
প্লাগইন কি?
প্লাগইন হল একপ্রকার এক্সটেনশন যা আপনার ওয়ার্ডপ্রেস ওয়েবসাইটকে নানা ভাবে সাহায্য করে। আপনার ওয়ার্ডপ্রেস ওয়েবসাইটে অনেক বৈশিষ্ট্য (Features) প্রথম থেকে থাকে না, কিন্তু প্লাগইন ইন্সটল করে আপনি সেই সকল বৈশিষ্ট্য অনায়াসে পেতে পারেন। যেমন, আপনার ওয়েবসাইটের সুরক্ষা কিম্বা পেজ বিল্ডার অথবা কোন স্পেশাল ফাংশন যদি আপনি পেতে চান তবে প্লাগইনের সাহায্য নিতে হবে।
কিভাবে একটি প্লাগইন ইন্সটল করব?
প্লাগইন ইন্সটল করা খুবই সহজ।
প্রথমেই Plugins > Add New অপশনে যান।
ওপরে ডান দিকে সার্চ অপশনে গিয়ে কোন প্লাগইন সার্চ করতে পারেন। এরপর যে প্লাগইন ইন্সটল করতে চান, সেখানে Install Now বোতামে ক্লিক করলেই আপনার প্লাগইন ইন্সটল হয়ে যাবে।
মনে রাখবেন, ওয়ার্ডপ্রেসে আপনি প্রায় ২৫০০০+ প্লাগইন বিনামূল্যে ইন্সটল করতে পারবেন।
আপনাদের সুবিধার্থে আমরা কয়েকটি প্লাগইন সুপারিশ করছি। এই প্লাগইন গুলি খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং আপনি অবশ্যই ইন্সটল করুন।
১. যোগাযোগের ফর্ম – Contact Form 7: এই প্লাগইন আপনার ওয়েবসাইটে একটি যোগাযোগের ফর্ম তৈরি করে দেবে। আপনার ওয়েবসাইট ব্যবহারকারীরা অনায়াসে তাঁদের ইমেইল, ফোন নম্বর এবং অন্যান্য তথ্য দিয়ে আপনার সাথে যোগাযোগ করতে পারবে। আপনি অনায়াসে আপনার ইমেইল মারফৎ সেইসব তথ্য পেয়ে জাবেন। তাই এই প্লাগইন খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
২. সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন – Yoast SEO: শুধু ওয়েবসাইট তৈরি করাই নয়, আপনার ওয়েবসাইটকে SEO Friendly করে তুলতে হবে। আপনার ওয়েবসাইট যদি গুগলে সার্চ করলে না দেখায় তবে সেরকম ওয়েবাইটের কোন মূল্য নেই। Yoast SEO সেই কাজটিই আরও সহজ করে দেবে। এই প্লাগইনের সাহায্যে আপনি আপনার ওয়েবসাইটের SEO ঠিক করতে পারবেন।
৩. গুগল অ্যানালাইটিক্স – Google Analytics: গুগল অ্যানালাইটিক্স আপনার ওয়েবসাইট ব্যবহারকারীদের তথ্য আপনাকে দেখাবে। যেমন, কত ভিজিটর হল, বা কোন পেজ তারা বেশীবার দেখেছে অথবা তারা কোন কোন দেশ বা শহর থেকে এসেছে সেসব জানতে পারবেন। তাই এই প্লাগইন ইন্সটল করে নিন।
আমরা সেরা কিছু প্লাগইন সুপারিশ করেছি যা প্রথমাবস্থায় আপনার ওয়েবসাইটে দরকার। নীচের লিংকে ক্লিক করে দেখে নিতে পারেন।